নারিকেল চাষের সমস্যা ও তার প্রতিকার
পোকা–মাকড়
প্রধানত: ২টি পোকা নারিকেলের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। একটি গোবরে পোকা অপরটি লাল পাম উইভিল।
গোবরে পোকা
পূর্ণ বয়স্ক পোকা ১ ইঞ্চি লম্বা এবং ১ ইঞ্চি চওড়া। গায়ের উপর কালো শক্ত ঢাকনা থাকে। মাথার উপর গন্ডারের মত১টি শিং থাকে। সাধারাণত: গোবরের গাদা ও ময়লা আবর্জনায় এ পোকা জন্মায়।
ক্ষতির ধরণ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা নারিকেল গাছের কচি অগ্রভাগে ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং কচি অংশগুলোর রস গ্রহণ করে। এপোকা গাছের যে সমস্ত কচি অংশগুলো কেটে ফেলে সে গুলো পঁচে যায়। গাছের ফুল ও ফল ধারণ এবং বৃদ্ধি ব্যহত হয়।অনেক সময় সদ্য গজানো কচি পাতায় কাচি দিয়ে কাটার মতো দেখা যায়। আক্রমণ ব্যবপক হলে পাতাগুলো নিচেরদিকে ঝুলে পড়ে এবং গাছটি মারা যায়।



দমন
• নারিকেল বাগানের ভিতর বা আশ– পাশে গোবরের গাদা বা ময়লা আবর্জনা রাখা যাবে না।
• যে সকল গাছ মারা গেছে বা মরার উপক্রম হয়েছে সেগুলোকে বাগান হতে অপসারণ পূর্বক ধংস করতে হবে।
• নারিকেল বাগানের ভিতর বা আশ– পাশে গোবরের গাদা বা ময়লা আবর্জনা রাখা যাবে না।
• যে সকল গাছ মারা গেছে বা মরার উপক্রম হয়েছে সেগুলোকে বাগান হতে অপসারণ পূর্বক ধংস করতে হবে।
• গাদার অগ্রভাগে বা ডগায় পোকার ছিদ্র দেখা গেলে তার মধ্যে লোহার শিক ঢুকিয়ে পোকাকে মেরে ফেলতে হবে।
• সিরিন্স দ্বারা যে কোন কীটনাশক পানিতে মিশিয়ে দিয়ে ছিদ্রের মধ্যে প্রয়োগ করো ছিদ্রের মুখটি বন্ধ করে দিতে হবে।
• গাছের পাতা কাচি দিয়ে কাটার মত করে কাটা রয়েছে দেখলেই পোকা দমনে তৎপর হতে হবে।
• পঁচা খৈল দ্বারা ফাদ তৈরী করে গোবরে পোকাকে মারার চেষ্টা করতে হবে।
• গাছের ৫/৬ পাতার পত্র কক্ষে করাতের গুড়া এবং ডায়াজিন ৯.১ হারে মিশেয়ে প্রয়োগ করলে পোকা দমন করা যায়।
লাল পাম উইভিল
পূর্ণ বয়স্ক পোকা খয়েরী রং হতে তামাটে রংয়ের হয়। পোকার দেহ সরু এবং লম্বায় ১ –১ ইঞ্চি হয়ে থাকে। দুপাশে লম্বা২টি শূং আছে যা পোকার দেহ হতে লম্বা হয়।
ক্ষতির ধরণ
পূর্ণ বয়স্ক পোকা ও এর কিড়া গাছের কান্ডের ভিতরের নরম শাঁস কুড়ে কুড়ে খায়। কান্ডের চারদিকে ছোট ছোট ছিদ্রদেখা যায়। অনেক সময় ছিদ্র দিয়ে পোকার বিষ্টা ও কাঠের গুড়া বাহির হয়ে আসে। গাছের ডগার নিচ হতে পাতাগুলোনিচের দিকে ঝুলে পড়ে এবং আস্তে আস্তে গাছ মারা যায়।


দমন পদ্ধতি
যে কোন কীটনাশক পানির সাথে মিশিয়ে ইনজেকশনের সিরিন্স দিয়ে ছিদ্রপথে গাছের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে মূখ গুলো কাদামাটি দিয়ে লেপে দিতে হবে। এভাবে প্রয়োজনে ২/৩ বার ব্যবস্থা নিলে পোকার দমন নিশ্চিত হবে।
উই পোকা
উই পোকা নারিকেল বীজতলা এবং বয়স্ক গাছের জন্য ক্ষতিকর।
ক্ষতির ধরণ
পোকা অনেক সময় গাছের শিকড় খেয়ে ফেলে , গাছের গুড়ির উপর দিয়ে মাটিসহ গাছের মাথা পর্যন্ত চলে যায়। এসময় পোকা গাছের বাকল খেয়ে নষ্ট করে ফেলে। গাছের ডগার স্পেদ আক্রান্ত হলে সম্পুন্ন ক্রাউনটি নষ্ট করে ফেলতেপারে। এমনকি গাছটি মারাও যেতে পারে।

দমন
বৎসরে ২ বার সার প্রয়োগের সময় উই পোকার আক্রমন প্রবন এলাকায় গাছের গোড়ায় সেভিন পাউডার/ রিজেনটপ্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যায়।
বৎসরে ২ বার সার প্রয়োগের সময় উই পোকার আক্রমন প্রবন এলাকায় গাছের গোড়ায় সেভিন পাউডার/ রিজেনটপ্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যায়।
রোগবালাই
কান্ডের গোড়া পচা রোগ
ছত্রাক ঘটিত রোগ। Ghanoderma spp. নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয় । প্রধানত : বয়স্ক ও দূর্বল গাছ গুলোই এরোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়। শিকড়ের মধ্যেমেই এ রোগের বিস্তার লাভ করে।
লক্ষণ
আক্রান্ত শিকড় গুলেঅ লম্বা হয়ে যায়। পত্রক শুকিয়ে যাওয়া, হলদে থেতে বাদামী বর্ণ ধারণ করা পরিশেষে পাতা গুলোশুকিয়ে গাছকে বেষ্টন করে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। কান্ডের গোড়ায় বৈশিষ্টমূলক বাদামী রংগের দাগ হয় এবং বাদামীরংগের রস / তরল নির্গত হয়। গাছের ফল ঝরে পড়ে এবং ফলের সংখ্যা কমে যায়। মুকুট ক্রমশ সংকচিত হয়ে আসেপরিশেষে গাছ মারা যায়। ঝড়ে মুকুট খসে পড়ে এবং গাছ মুকুটবিহীন অবস্থায় দাড়িয়ে থাকে।
আক্রান্ত শিকড় গুলেঅ লম্বা হয়ে যায়। পত্রক শুকিয়ে যাওয়া, হলদে থেতে বাদামী বর্ণ ধারণ করা পরিশেষে পাতা গুলোশুকিয়ে গাছকে বেষ্টন করে নিচের দিকে ঝুলে পড়ে। কান্ডের গোড়ায় বৈশিষ্টমূলক বাদামী রংগের দাগ হয় এবং বাদামীরংগের রস / তরল নির্গত হয়। গাছের ফল ঝরে পড়ে এবং ফলের সংখ্যা কমে যায়। মুকুট ক্রমশ সংকচিত হয়ে আসেপরিশেষে গাছ মারা যায়। ঝড়ে মুকুট খসে পড়ে এবং গাছ মুকুটবিহীন অবস্থায় দাড়িয়ে থাকে।

দমন
এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা না গেলে এ রোগ দমন করা দুঃসাধ্য।
এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক অবস্থায় ধরা না গেলে এ রোগ দমন করা দুঃসাধ্য।
• আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্থ গাছ পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
• আক্রামনের প্রাথমিক আবস্থায় আক্রান্ত সকল পোষ–কলা অপসারণ করে বোর্দো পেষ্ট লঅগাতে হবে। গাছের মাথাথেকে নতুন পাতা না গজানো পর্যন্ত ঔষধ ব্যবহৃত জায়গাটি ঢেকে রাখতে হবে।
• আশে পাশে সকল সুস্থ গাছে বোর্দো মিক্সার স্প্রে করতে হবে।
• পানি নিকাশ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে।
পাতার ব্লাইট রোগ
ছত্রাক দ্বারা এ রোগ সংগঠিত হয়। Peatalozzia palmarum নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয় । সাধারণত আঘাতপ্রাপ্ত পাতা ও দূর্বল গাছে এ রোগের লক্ষণ বেশী দেখা যায়।
লক্ষণ
পাতার উপরে ধূসর রংগের কিনারাসহ হলূদ–বাদামী রংগের দাগ দেখা যায়। পাবর্তীরতে সম্পূর্ন দাগটি ধূসর বর্ণধারণ করে। দাগগুলো শিরার সমান্তরাল ভাবে সম্প্রসারিত হতে থাকে। সর্ব শেষে দাগগুলো একত্রিত হয়ে প্রত্রকেরচেহারা বিবর্ণ করে ফেলে। পটাশ সারের ঘাটতি বা নাইট্রোজেন সারের আধিক্য এ রোগ বিস্তারে সহায়তা করে।
পাতার উপরে ধূসর রংগের কিনারাসহ হলূদ–বাদামী রংগের দাগ দেখা যায়। পাবর্তীরতে সম্পূর্ন দাগটি ধূসর বর্ণধারণ করে। দাগগুলো শিরার সমান্তরাল ভাবে সম্প্রসারিত হতে থাকে। সর্ব শেষে দাগগুলো একত্রিত হয়ে প্রত্রকেরচেহারা বিবর্ণ করে ফেলে। পটাশ সারের ঘাটতি বা নাইট্রোজেন সারের আধিক্য এ রোগ বিস্তারে সহায়তা করে।

দমন
আক্রান্ত গাছে বোর্দো মিক্সার/ তামা ঘটিত ছত্রাক নাশক/ জিংক ও ম্যাগনেশিয়াম সম্বলিত কাবানেট ১৫ দিন অন্তরঅন্তর স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়।
আক্রান্ত গাছে বোর্দো মিক্সার/ তামা ঘটিত ছত্রাক নাশক/ জিংক ও ম্যাগনেশিয়াম সম্বলিত কাবানেট ১৫ দিন অন্তরঅন্তর স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়।
কান্ডের রস–ঝরা রোগ
ছত্রাক জনিত রোগ। Thielaviopsis paradoxa নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয়। ছত্রাক গাছের ক্ষত বা ফাটলেরমধ্যে দিয়ে গাছে প্রবেশ করে ।

লক্ষণ
গাছের ফাটল বা ক্ষতস্থান দিয়ে লালচে বাদামী রস নির্গত হয়। রস শুকিয়ে গেলে জায়গাটি কালো হয়ে যায়। আক্রামনব্যাপক হলে আক্রমন স্থানে পচন শুরু হয়, বাকল খুলে যায়, কান্ডে গর্তের সৃষ্টি হয়। গাছের ফলন অনেক কমে যায়।
গাছের ফাটল বা ক্ষতস্থান দিয়ে লালচে বাদামী রস নির্গত হয়। রস শুকিয়ে গেলে জায়গাটি কালো হয়ে যায়। আক্রামনব্যাপক হলে আক্রমন স্থানে পচন শুরু হয়, বাকল খুলে যায়, কান্ডে গর্তের সৃষ্টি হয়। গাছের ফলন অনেক কমে যায়।
দমন
ধারাল ছুরি দিয়ে আক্রান্ত কোষ/কলা ভালকরে চেচে তুলে তস্থানে ঠান্ডা আলকাতরা বা বোর্দো পেষ্ট লাগাতে হবে।
ধারাল ছুরি দিয়ে আক্রান্ত কোষ/কলা ভালকরে চেচে তুলে তস্থানে ঠান্ডা আলকাতরা বা বোর্দো পেষ্ট লাগাতে হবে।
ফল –পঁচা রোগ
ছত্রাক জনিত রোগ। Phytophthora omnitora নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয়
লক্ষণ
অপক্ক ফল পঁচে যাওয়া এবং ঝরে পড়া এ রোগের লক্ষণ । প্রথমে ফলের গোড়ার দিকে বিবর্ন হয় যা গাড় সবুজ ও পানিভেজা মনে হয়। পরবর্তীতৈ তা বাদামী রং ধারণ করে। কলা গুলো শুকিয়ে গর্তের সৃষ্টি করে। ফলের গায়ে সাদাজটাকার সংক্রামক জীবানু দেখা যায়। নারিকেলের খোল শক্ত না হলে পচন ক্রিয়া শাসেও শুরু হয় বর্ষা কালে এরোগের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা দেয়।
অপক্ক ফল পঁচে যাওয়া এবং ঝরে পড়া এ রোগের লক্ষণ । প্রথমে ফলের গোড়ার দিকে বিবর্ন হয় যা গাড় সবুজ ও পানিভেজা মনে হয়। পরবর্তীতৈ তা বাদামী রং ধারণ করে। কলা গুলো শুকিয়ে গর্তের সৃষ্টি করে। ফলের গায়ে সাদাজটাকার সংক্রামক জীবানু দেখা যায়। নারিকেলের খোল শক্ত না হলে পচন ক্রিয়া শাসেও শুরু হয় বর্ষা কালে এরোগের প্রাদুর্ভাব বেশী দেখা দেয়।

দমন
বোর্দো মিক্সার/ ডায়য়েম এনম–৪৫, ১৫ অন্তর অন্তর স্প্রে করতে হবে।
বোর্দো মিক্সার/ ডায়য়েম এনম–৪৫, ১৫ অন্তর অন্তর স্প্রে করতে হবে।
গাছের পাতার খল সংগ্রহ করে পুরিয়ে ফেলতে হবে।
অপক্ক ফল ঝরা
ছত্রাক জনিত রোগ। Phytophthora palmivora নামক ছত্রাক দ্বারা সংগঠিত হয়। কচি ডাবের গোড়ায় কাল দাগপড়ে এবং ফল ঝড়ে যায়।
দমন
বোর্দো মিক্সার/ ডায়যেন এম –৪৫/ কপার ছত্রাক নাশক প্রয়োগে দমন করা যায়।
বোর্দো মিক্সার/ ডায়যেন এম –৪৫/ কপার ছত্রাক নাশক প্রয়োগে দমন করা যায়।
বন্ধ্যা বা বোবা নারিকেল
অনেক সময় নারিকেলে শাঁস বা পানি থাকে না এ সকল নারিকেল হলো বন্ধ্যা বা
বোবা নারিকেল
ত্রুটি পূর্ণ পরাগায়ন বা গর্ভধারণ গাছে পুষ্টির অভাব হলে মাটিতে পটাশিয়াম ও বোরনের ঘাটতিতে এ সমস্যা হয়।
ফল ঝরা
• পোকার আক্রমনে
• ইদুর বা কাঠবিড়ালীর আক্রমণে
• পটাশিয়াম সারের ঘাটতি
• সঠিকভাবে পরাগায়ন না হলে
• আবহাওয়ার তারতম্য এবং বাতাসে আদ্রতার আধিক্য হলে
• কাদিতে ফলের সংখা খুব বেশী হলে।
• হরমোনের অভাবে (২–৪– ডি, ৬০ পিপিএম স্প্রে করে সমস্যার উন্নতি করা যায়)
Comments
Post a Comment